what of the devil+Iblish (শয়তান কি)

ইসলামি জ্ঞানের সমুদ্র বলে যাঁকে সবাই একবাক্যে মেনে নেন সেই বিশ্ববিখ্যাত হুজ্জাতুল ইসলাম ইমাম গাজ্জালির এহিয়ায়ে উলুমউদ্দিন নামক বিশাল কেতাবের একস্থানে তিনি যে জনৈক মুসলমান ব্যক্তিকে হজরত বাবা জুন্নুন মিসরির মাজারে গিয়ে চাইবার কথাটি বলেছেন,  উহাকে ওহাবি ফেরকার অনুসারী আলেম-উলামারা বিভিন্ন বিদ্রুপের ভাষায় গালিগালাজ করেছেন। ওহাবি আলেম-উলামাদের জানা নেইযে আল ­াহ পাক জিন এবং মানুষের নিকটেই জাতরূপে অবস্থান করেন iwhat of the devil (শয়তান কি)


আল ­াহ্র এই জাতরূপটি যখন কোনো ওলি নির্জনে বছরের পর বছর ধ্যানসাধনা করে উদ্ভাসিত করেন, তথা আল ­াহ্র জাত নুর নিজের ভিতরে প্রকাশিত হয়ে পড়ে, তখন জুন্নুন মিসরির কাছে চাওয়া আর আল ­াহ্র কাছে চাওয়া একই কথা। মাওলানা জালাল উদ্দিন রুমিতাই বলে গেছেন যে, আল ­াহ্র কার্যকলাপ আল ­াহ নিজেই করে যাচ্ছেন, কিন্তু মনে হয় মানুষই করছে।যারা রুহকে নুরানি মাখলুক বলে তথা নুরময় সৃষ্টি বলে জানতে চায়, বুঝতে চায় তারা এই ওলিদের রহস্যের বিন্দুবিসর্গও জানতে পারে না এবং বুঝতে পারে না। কারণ রুহ সৃষ্টি নয় তথা মাখলুক নয়। এদেরকে হাজার দলিল-প্রমাণ দিয়ে বুঝিয়ে দিলেও বুঝতে পারে না। যেমন- হাজার দলিল দিয়েও একটি শিয়া ফেরকার মুসলমানকে সুন্নি ফেরকায় নিয়ে আসা যায় না। ইহাই হলো জন্মই আমার আজন্ম তকদির। সুতরাং এই তকদির নিয়ে যারা জন্মগ্রহণ করেছেন তাদেরই বা কী দোষ দেব

বিখ্যাত নোবেল বিজয়ী লেখক জর্জ বার্নার্ড শ একটি কথা বার বার বুঝিয়ে দিয়ে গেছেন এই বলে যে, ‘যাদের আল ­াহ আকাশে থাকেতাদের থেকে দূরে থাকতে চেষ্টা ক'রো, কারণ এরা নিষ্ঠুর এবং ভয়ঙ্কর। এরা যে কোনো নিষ্ঠুর কাজ করতে দ্বিধা বোধ করবে না।' রুহকে সৃষ্টির মধ্যে এনে পাঁচ ভাগ করে ফেলে। যেমন : (১) রুহে জামাদি, (২) রুহে নাবাতি, (৩) রুহে হায়ওয়ানি, (৪) রুহে ইনসানি, (৫) রুহে বাতেনি। রুহ কী করে এবং কেমন করে পশুর মাঝে অবস্থান করে ইহা আমার জানা নাই এবং কোরান-এর একটি

আয়াতেও রুহে হায়ওয়ানি তথা জানোয়ারের রুহ বলে উলে ­খ করা হয় নাই। আসলে রুহ এক, অনাদি, নিত্য, অসীম। রুহের কোনো ভাগ হয় না এবং ভাগ করা যায় না। যেমন রক্তের শ্বেত কণিকাকে তথা হোয়াইট ব ­াড সেলকে ভাগ করা যায় না। অথচ রক্তের লৌহকণিকা তথা রেড ব ­াড সেলকে অনেক রকম ভাগ করা যায় এবং এই ভাগের মধ্য দিয়েই রোগটি ধরা পড়ে। নফ্স তথা প্রাণকেনফ্স বলাই ভালো

নফ্সের কয়েকটি ভাগ করা যায়, যেমন নফ্সে আম্মারা, নফ্সে লাউয়ামা, নফ্সে মোতমায়েন্না, নফ্সে মুলহেমারএবং নফ্সে ওয়াহেদাতান। অথচ কোনো অবস্থাতেই রুহ তথা পরমাÍাকে ভাগ করা যায় না। রুহের এই রকম পাঁচ প্রকার ভাগগুলোদেখলে অবাক হতে হয়। ফেরেশতা জিবরিলের আরেকটি নাম হলো রুহুল আমিন। ফেরেশতাদেরকে নফ্স ও রুহ তথা জীবাÍা ওপরমাÍার একটিও দেওয়া হয় নি। ফেরেশতারা- অনেকটা বোঝাতে গিয়ে রূপক ভাষায় বলতে হচ্ছে যে- ফেরেশতারা হলো নফ্স এবংরুহ ছাড়া এক ধরনের রোবট। রোবট এই জন্য বললাম যে, এরা মানুষের রূপ ধরতে পারে। কিন্তু যতই মানুষের আকৃতি ধারণ করুক না কেন, রুহের রহস্য সবার পক্ষে বোঝালেও বোঝা সম্ভবপর নয়। রুহের রহস্য ধ্যানসাধনার মাধ্যমে পরিচয় হয়। এই রুহের পরিচয়টি আকাশেও পাওয়া যায় না, মাটিতেও পাওয়া যায় না। এই যদি ইসলাম গবেষণার মারভেলাস ফসল হয় তা হলে এদের জ্ঞানের বহরও মারভেলাস। এবং মারভেলাসভাবে সাধারণ মুসলমানদেরকে ঠকানো হচ্ছে। এমনকি কোনো কোনো ক্ষেত্রে বিশেষ মুসলমানেরাও আসল মনে করে ইমিটেশন খরিদ করছে

 

ইমাম গাজ্জালির এহিয়ায়ে উলুমউদ্দিন বইটি বাংলায় অনুবাদ করা হয়েছে। অনুবাদক গোলাবি ওহাবি হওয়ার দরুন অনেক কথার অনুবাদ করে নি। সরল পাঠকের পক্ষে এই বিকৃত, মনগড়া এবং বানোয়াট অনুবাদটি ধরবার সম্ভাবনা থাকে না। এই অনুবাদগুলোকে বলা যেতে পারে এহিয়ায়ে কলুমউদ্দিন, এহিয়ায়ে ছলিমউদ্দিন ইত্যাদি। বিজ্ঞানী নিউটনের একটি সূত্র হলো : প্রতিটি কাজের সমান ও বিপরীত প্রতিক্রিয়া আছে। আজাজিল ফেরেশতাদের ইমাম তথা সরদার ছিলেন। এই জন্য আজাজিলকে ইমামে মালাইকা বলা হতো। আল ­াহ্র একটিমাত্র আদেশ, আদমকে সেজদা করার হুকুমটি,  অমান্য করে বলে ফেললো যে আজাজিল আদম হইতে উত্তম। আল ­াহ্র আদেশ অমান্য করার শাস্তি আল ­াহ নিজেই দিলেন এবং চারটি নাম দেওয়া হলো। আজাজিলের প্রথম নামটি হলো ইবলিস তথা অহঙ্কারী, তারপর শয়তান তথা যতো আকাম-কুকামের নেতা, তারপর মরদুদ, তারপর খান্নাস। শয়তানের কাজটি হলো আদম সন্তানদেরকে বিপথে নিয়ে যাওয়া এবং জাহান্নামের পথ দেখিয়ে দেওয়া

শয়তানের ধোঁকায় পড়ে আদম সন্তানেরা হরহামেশা প্রতারিত হচ্ছে, বিভ্রান্ত হচ্ছে। কিন্তু একটি বিরাট প্রশ্ন থেকে যায়, আর সেই প্রশ্নটি হলো যে, শয়তানের আগে তো কোনো শয়তানই ছিলো না, তাহা হইলে আজাজিলকে কে শিখিয়ে দিলো যে সে আদম হইতে উত্তম? এই প্রশ্নের উত্তরটি ইচ্ছা করেই এড়িয়ে গেলাম। কেননা যা কিছুই আল ­াহ করেছেন তার মূল উদ্দেশ্যটি হলো আদম সন্তানদেরকে পরীক্ষা করা। তাই আমরা দেখতে পাই যে আল ­াহ এক নিমেষেই পৃথিবীর সব মানুষকে এক উম্মতে পরিণত করতে পারতেন, কিন্তু এটাই যদি করা হতো তা হলে পরীক্ষা নামক শব্দটির আর এক পয়সাও মূল্য থাকে না। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) যতোগুলো হাদিস প্রকাশিত করেছেন তার চেয়ে গোপন রাখার রহস্যময় হাদিসগুলো মোটেই কম ছিলো না। হজরত ইবনে আব্বাস (রা.), হজরত আবু জর গিফারি (রা.) এবং হজরত হুজায়ফা (রা.)-এর বেলায়ও একই কথা কমবেশি খাটে। তাই দেখা যায়, পৃথিবীর বিখ্যাত ওলি-আল ­াহদের লিখনির রহস্য বুঝতে না পেরে যা-তা গালাগালি করে। ওহাবি আলেম-উলামারা নিজেদের মন মতো মাপতে চায় এবং মাপতে গেলেই বিরাট বিরাট ভুল করে বসে, অথচ দোষটি চাপিয়ে দেয় আল ­াহ্র ওলিদের উপর। তাই গাউসুল আজম, ইবনুল আরাবি, আহমদ রেফাই, জালাল উদ্দিন রুমি এবং ইমাম গাজ্জালিকে ‘খামসায়ে কাফেরে আকবর' তথা পাঁচ শ্রেষ্ঠ কাফের বলে ফতোয়া দিয়েছে

বোড়া সাপ বেদের বীণের সুরে নাচতে পারে না, তাই জাতি সাপদের নাচানাচিটা দেখে বোড়া সাপেরা হি হি করে হাসে আর ‘ভ-ামি করছে' বলে অপবাদ দেয়। আমরা বোড়া সাপেরও দোষ দেখতে পাচ্ছি না, কারণ বোড়া সাপের তকদিরে নৃত্য করার কথাটি লিখা নাই। সুতরাং জাতি সাপের নৃত্য দেখে অবাক হবারই তো কথা। তা হলে চরম পর্যায়ে গিয়ে দেখতে পাওয়া যায় যে, আল ­াহ পাকের সৃষ্টিতে কোথাও বিন্দুমাত্র ভুল নাই। খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে সৃষ্টিরাজ্যের রহস্য দেখতে গিয়ে ভুল পাওয়া তো দূরের কথা, বরং চোখ বিস্ফারিত হয়ে নিজের কাছেই ফেরত আসে। মানুষ যখন বুঝতে পারে যে, ছয় হাজার আলোকবর্ষ দূরে অবস্থান করা নিউট্রন তারকাটির এক চায়ের চামচ বস্তু পৃথিবীতে এনে মাপতে গেলে ওজনটি দাঁড়ায় একশত কোটি টন। বিজ্ঞানীরা থতমত খেয়ে যায়। বিজ্ঞানীরা চিৎকার দিয়ে বলতে চায় : আল ­াহ পাক, 

তোমার সৃষ্টিতে বিন্দুমাত্র ভুল পাওয়া তো দূরের কথা, বরং চোখ, জ্ঞান বিস্ফারিত হয়ে নিজেদের কাছেই ফেরত আসে। কোরান-এর সুরা মূলক-টি পড়ে দেখুন তো, অধম লিখকের এই কথাগুলো কতোটা সত্যতা বহন করে! অথচ এই নিউট্রন তারার ভেতরে যা কিছু আছে এবং যত শক্তিশালী হোক না কেন এবং যত অদ্ভুত এবং বিস্ময়করই হোক না কেন, সবই কিন্তু আল ­াহ্র সেফাত মাত্র অথবা সেফাতের সেফাত এভাবে অনেক বিবর্তনের কর্মফল মাত্র। এই বিজ্ঞানের আবিষ্কারগুলো আমাদের চমকায়, আমাদেরকে অবাক করে, আমাদেরকে বিস্ময়ে অভিভূত করে। কিন্তু এই বিজ্ঞানের সম্ভবত কোনোই ক্ষমতা নেই আল ­াহকে দর্শন দেবার জন্য। কারণ যদিও সেফাতগুলো আল ­াহ পাক হতেই আগত, কিন্তু সেফাত জাত নয়। আল ­াহ্র জাতরূপটি মানুষের ভেতরেই রুহরূপে অতি সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্মরূপে বিরাজ করছে।





Post a Comment

Previous Post Next Post